বিসমিল্লাহির-রাহ’মানির রাহী’ম।
জান্নাতে যাওয়ার সহজ আমল (পর্ব-১)
আল্লাহ তাআ’লা মানুষকে সৃষ্টি করেছেন দুর্বলভাবে। আল্লাহ তাআ’লা বলেন, “আর মানুষকে সৃষ্টি করা হয়েছে দুর্বলভাবে।” সুরা আন-নিসাঃ ২৮।
মানবিক এই দুর্বলতার কারণে ইচ্ছায় কিংবা অনিচ্ছায়, জেনে হোক কিংবা না জেনে, নিজের কু-প্রবৃত্তির অনুসরণ করে, শয়তানের ধোঁকায় পড়ে, মানুষের চাপে পড়ে, প্রলোভনের শিকার হয়ে কিংবা খারাপ সংগীর পাল্লায় পরে মানুষ ছোট কিংবা বড় গুনাহতে লিপ্ত হয়ে পড়ে। মানুষের এমন অনেক পাপ রয়েছে, যা মানুষ নিজে বুঝতেই পারেনা যে কোন কথা বা কাজের কারণে বাম পাশের ফেরেশতা তার আমল নামায় পাপ লিখে ফেলছেন। মানুষ তার দুর্বলতার কারণে পাপে লিপ্ত হওয়ার কারণে, কোন মানুষের পক্ষে আল্লাহ তাআ’লার রহমত ছাড়া শুধুমাত্র নিজের আমল দ্বারা জান্নাতে যেতে পারবেনা।
উম্মুল মুমিনিন আয়ি’শাহ রাদিয়াল্লাহু আ’নহা একবার রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আ’লাইহি ওয়া সাল্লামকে জিজ্ঞেস করলেন, “ইয়া রাসুলুল্লাহ! আল্লাহ তাআ’লার রহমত এবং করুণা ছাড়া কেউ জান্নাতে প্রবেশ করতে পারবে?” রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আ’লাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন, “এমন কোন মানুষ নেই যে, আল্লাহ তাআ’লার রহমত ছাড়া জান্নাতে প্রবেশ করতে পারবে।” তখন আয়ি’শাহ রাদিয়াল্লাহু আ’নহা আবার জিজ্ঞেস করলেন, “এমনকি আপনিও নন ইয়া রাসুলুল্লাহ?” তিনি বললেন, “না, এমনকি আমিও না। তবে আল্লাহ তাআ’লা তাঁর স্বীয় রহমত দ্বারা আমাকে ঢেকে রাখবেন।” এ কথাটি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আ’লাইহি ওয়া সাল্লাম তিনবার বললেন। সহীহ বুখারী, সহীহ মুসলিম, মিশকাতুল মাসাবিহঃ ৪০৮ পৃষ্ঠা।
মানুষ যাতে আল্লাহর রহমত পেতে পারে সেইজন্য আল্লাহ তাআ’লা বান্দাদেরকে তাঁকে সন্তুষ্ট করার জন্য ইবাদতের পদ্ধতি শিক্ষা দিয়েছেন। সেই ইবাদত করে মানুষ আল্লাহকে সন্তুষ্ট করতে পারে, বিনিময়ে আল্লাহ তাঁর প্রিয় বান্দাদেরকে জান্নাত দিবেন। কুরআন ও সহীহ হাদীসে বর্ণিত এমন বিশেষ কিছু ইবাদত বর্ণনা করা হলো, যা বান্দাকে জান্নাতে প্রবেশ করাবে।
.
(১) আন্তরিক বিশ্বাসের সাথে কালেমার সাক্ষ্য দেওয়া ও তার হক্ক আদায় করাঃ
রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আ’লাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, “আল্লাহ তাআ’লা এমন ব্যক্তির উপর জাহান্নামের আগুন হারাম করে দিয়েছেন, যে ব্যক্তি আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভের উদ্দেশ্যে ‘লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহ’ বলে সাক্ষ্য দিয়েছে।” সহীহ বুখারী, সহীহ মুসলিম।
রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আ’লাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, “যে ব্যক্তি এই সাক্ষ্য দেবে যে, আল্লাহ ছাড়া সত্য কোনো উপাস্য নেই এবং মুহা’ম্মাদ তাঁর রাসুল, আল্লাহ তার জন্য জাহান্নাম হারাম করে দেবেন।” সহীহ বুখারীঃ ৩৪৩৫, সহীহ মুসলিমঃ ২৮, সুনানে তিরমিযিঃ ২৬৩৮।
রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আ’লাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, “যে ব্যক্তি এই সাক্ষ্য দান করল যে, আল্লাহ ছাড়া অন্য কোন ইলাহ নেই। তিনি একক, তাঁর কোন শরীক নেই। মুহা’ম্মদ সাল্লাল্লাহু আ’লাইহি ওয়া সাল্লাম তাঁর বান্দা ও রাসুল। ঈসা আ’লাইহিস সালাম আল্লাহর বান্দা ও রাসুল। তিনি (ঈসা) তাঁর এমন এক কালিমা (বাক্য), যা তিনি মারইয়াম আ’লাইহিস সালামের প্রতি প্রেরণ করেছেন, এবং তিনি আল্লাহর পক্ষ থেকে প্রেরিত রূহ (আত্মা)। জান্নাত সত্য, জাহান্নাম সত্য। সে ব্যক্তিকে আল্লাহ তাআ’লা জান্নাত দান করবেন, তার আমল যাই হোক না কেন।” সহীহ বুখারী, সহীহ মুসলিমঃ ৮০।
.
(২) শিরক থেকে মুক্ত থাকা এবং তাওহীদের উপরে মৃত্যুবরণ করাঃ
ছোট কিংবা বড়, প্রকাশ্য কিংবা গোপন, সমস্ত প্রকার শিরক থেকে বেঁচে থেকে তাওহীদের উপরে মৃত্যুবরণ করা একজন মানুষকে জান্নাতে নিয়ে যাবে।
রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আ’লাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, “আল্লাহ তাআ’লা বলেছেন, “হে আদম সন্তান! তুমি যদি দুনিয়া পরিমান গুনাহ নিয়ে আমার কাছে হাজির হও, আর আমার সাথে কাউকে শরিক না করা অবস্থায় মৃত্যু বরণ কর, তাহলে আমি দুনিয়া পরিমাণ মাগফিরাত (ক্ষমা) নিয়ে তোমার দিকে এগিয়ে আসবো।” সুনানে তিরমিযীঃ ২৩৫৭, হাদীসটির সনদ হাসান।
রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আ’লাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, “যে ব্যক্তি আল্লাহর সাথে কাউকে শরীক না করে মৃত্যু বরণ করবে, সে জান্নাতে প্রবেশ করবে। আর যে ব্যক্তি আল্লাহর সাথে কাউকে শরীক করে মৃত্যু বরণ করবে, সে জাহান্নামে প্রবেশ করবে।” সহীহ বুখারীঃ ২৮৫৬, সহীহ মুসলিমঃ ১৫৩।
সাহাবী মুআ’য বিন জাবাল রাদিয়াল্লাহু আ’নহু থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, একদা আমি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আ’লাইহি ওয়া সাল্লামের পিছনে একটি গাধার পিঠে বসে ছিলাম। তিনি আমাকে ডাক দিয়ে বললেন, “হে মুআ’য! তুমি কি জানো, বান্দার উপর আল্লাহর কি অধিকার রয়েছে? আর আল্লাহর উপর বান্দার কি অধিকার আছে?” আমি বললাম, “আল্লাহ ও তাঁর রাসুলই ভালো জানেন।” তিনি বললেন, “বান্দার উপর আল্লাহর অধিকার হচ্ছে এই যে, তারা শুধুমাত্র তাঁরই ইবাদত করবে এবং তাঁর সাথে কাউকে শরিক করবে না। আর আল্লাহর উপর বান্দার অধিকার হচ্ছে, যারা তাঁর সাথে কাউকে শরিক করবে না, তাহলে তিনি তাদেরকে শাস্তি দেবেন না।” আমি (মুআ’য) বললাম, “ইয়া রাসুলুল্লাহ, আমি কি এই সুসংবাদ লোকদেরকে জানিয়ে দেব না?” তিনি বললেন, “তুমি তাদেরকে এই সুসংবাদ দিওনা, তাহলে তারা ইবাদত ছেড়ে দিয়ে (আল্লাহর উপর ভরসা করে) হাত গুটিয়ে বসে থাকবে।” সহীহ মুসলিমঃ ৪৬, সহীহ বুখারীর ‘কিতাবুল রিক্বাক’, হাদীস নং-৫০৭।
জান্নাতে যাওয়ার সহজ আমল (পর্ব-১)
আল্লাহ তাআ’লা মানুষকে সৃষ্টি করেছেন দুর্বলভাবে। আল্লাহ তাআ’লা বলেন, “আর মানুষকে সৃষ্টি করা হয়েছে দুর্বলভাবে।” সুরা আন-নিসাঃ ২৮।
মানবিক এই দুর্বলতার কারণে ইচ্ছায় কিংবা অনিচ্ছায়, জেনে হোক কিংবা না জেনে, নিজের কু-প্রবৃত্তির অনুসরণ করে, শয়তানের ধোঁকায় পড়ে, মানুষের চাপে পড়ে, প্রলোভনের শিকার হয়ে কিংবা খারাপ সংগীর পাল্লায় পরে মানুষ ছোট কিংবা বড় গুনাহতে লিপ্ত হয়ে পড়ে। মানুষের এমন অনেক পাপ রয়েছে, যা মানুষ নিজে বুঝতেই পারেনা যে কোন কথা বা কাজের কারণে বাম পাশের ফেরেশতা তার আমল নামায় পাপ লিখে ফেলছেন। মানুষ তার দুর্বলতার কারণে পাপে লিপ্ত হওয়ার কারণে, কোন মানুষের পক্ষে আল্লাহ তাআ’লার রহমত ছাড়া শুধুমাত্র নিজের আমল দ্বারা জান্নাতে যেতে পারবেনা।
উম্মুল মুমিনিন আয়ি’শাহ রাদিয়াল্লাহু আ’নহা একবার রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আ’লাইহি ওয়া সাল্লামকে জিজ্ঞেস করলেন, “ইয়া রাসুলুল্লাহ! আল্লাহ তাআ’লার রহমত এবং করুণা ছাড়া কেউ জান্নাতে প্রবেশ করতে পারবে?” রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আ’লাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন, “এমন কোন মানুষ নেই যে, আল্লাহ তাআ’লার রহমত ছাড়া জান্নাতে প্রবেশ করতে পারবে।” তখন আয়ি’শাহ রাদিয়াল্লাহু আ’নহা আবার জিজ্ঞেস করলেন, “এমনকি আপনিও নন ইয়া রাসুলুল্লাহ?” তিনি বললেন, “না, এমনকি আমিও না। তবে আল্লাহ তাআ’লা তাঁর স্বীয় রহমত দ্বারা আমাকে ঢেকে রাখবেন।” এ কথাটি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আ’লাইহি ওয়া সাল্লাম তিনবার বললেন। সহীহ বুখারী, সহীহ মুসলিম, মিশকাতুল মাসাবিহঃ ৪০৮ পৃষ্ঠা।
মানুষ যাতে আল্লাহর রহমত পেতে পারে সেইজন্য আল্লাহ তাআ’লা বান্দাদেরকে তাঁকে সন্তুষ্ট করার জন্য ইবাদতের পদ্ধতি শিক্ষা দিয়েছেন। সেই ইবাদত করে মানুষ আল্লাহকে সন্তুষ্ট করতে পারে, বিনিময়ে আল্লাহ তাঁর প্রিয় বান্দাদেরকে জান্নাত দিবেন। কুরআন ও সহীহ হাদীসে বর্ণিত এমন বিশেষ কিছু ইবাদত বর্ণনা করা হলো, যা বান্দাকে জান্নাতে প্রবেশ করাবে।
.
(১) আন্তরিক বিশ্বাসের সাথে কালেমার সাক্ষ্য দেওয়া ও তার হক্ক আদায় করাঃ
রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আ’লাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, “আল্লাহ তাআ’লা এমন ব্যক্তির উপর জাহান্নামের আগুন হারাম করে দিয়েছেন, যে ব্যক্তি আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভের উদ্দেশ্যে ‘লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহ’ বলে সাক্ষ্য দিয়েছে।” সহীহ বুখারী, সহীহ মুসলিম।
রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আ’লাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, “যে ব্যক্তি এই সাক্ষ্য দেবে যে, আল্লাহ ছাড়া সত্য কোনো উপাস্য নেই এবং মুহা’ম্মাদ তাঁর রাসুল, আল্লাহ তার জন্য জাহান্নাম হারাম করে দেবেন।” সহীহ বুখারীঃ ৩৪৩৫, সহীহ মুসলিমঃ ২৮, সুনানে তিরমিযিঃ ২৬৩৮।
রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আ’লাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, “যে ব্যক্তি এই সাক্ষ্য দান করল যে, আল্লাহ ছাড়া অন্য কোন ইলাহ নেই। তিনি একক, তাঁর কোন শরীক নেই। মুহা’ম্মদ সাল্লাল্লাহু আ’লাইহি ওয়া সাল্লাম তাঁর বান্দা ও রাসুল। ঈসা আ’লাইহিস সালাম আল্লাহর বান্দা ও রাসুল। তিনি (ঈসা) তাঁর এমন এক কালিমা (বাক্য), যা তিনি মারইয়াম আ’লাইহিস সালামের প্রতি প্রেরণ করেছেন, এবং তিনি আল্লাহর পক্ষ থেকে প্রেরিত রূহ (আত্মা)। জান্নাত সত্য, জাহান্নাম সত্য। সে ব্যক্তিকে আল্লাহ তাআ’লা জান্নাত দান করবেন, তার আমল যাই হোক না কেন।” সহীহ বুখারী, সহীহ মুসলিমঃ ৮০।
.
(২) শিরক থেকে মুক্ত থাকা এবং তাওহীদের উপরে মৃত্যুবরণ করাঃ
ছোট কিংবা বড়, প্রকাশ্য কিংবা গোপন, সমস্ত প্রকার শিরক থেকে বেঁচে থেকে তাওহীদের উপরে মৃত্যুবরণ করা একজন মানুষকে জান্নাতে নিয়ে যাবে।
রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আ’লাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, “আল্লাহ তাআ’লা বলেছেন, “হে আদম সন্তান! তুমি যদি দুনিয়া পরিমান গুনাহ নিয়ে আমার কাছে হাজির হও, আর আমার সাথে কাউকে শরিক না করা অবস্থায় মৃত্যু বরণ কর, তাহলে আমি দুনিয়া পরিমাণ মাগফিরাত (ক্ষমা) নিয়ে তোমার দিকে এগিয়ে আসবো।” সুনানে তিরমিযীঃ ২৩৫৭, হাদীসটির সনদ হাসান।
রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আ’লাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, “যে ব্যক্তি আল্লাহর সাথে কাউকে শরীক না করে মৃত্যু বরণ করবে, সে জান্নাতে প্রবেশ করবে। আর যে ব্যক্তি আল্লাহর সাথে কাউকে শরীক করে মৃত্যু বরণ করবে, সে জাহান্নামে প্রবেশ করবে।” সহীহ বুখারীঃ ২৮৫৬, সহীহ মুসলিমঃ ১৫৩।
সাহাবী মুআ’য বিন জাবাল রাদিয়াল্লাহু আ’নহু থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, একদা আমি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আ’লাইহি ওয়া সাল্লামের পিছনে একটি গাধার পিঠে বসে ছিলাম। তিনি আমাকে ডাক দিয়ে বললেন, “হে মুআ’য! তুমি কি জানো, বান্দার উপর আল্লাহর কি অধিকার রয়েছে? আর আল্লাহর উপর বান্দার কি অধিকার আছে?” আমি বললাম, “আল্লাহ ও তাঁর রাসুলই ভালো জানেন।” তিনি বললেন, “বান্দার উপর আল্লাহর অধিকার হচ্ছে এই যে, তারা শুধুমাত্র তাঁরই ইবাদত করবে এবং তাঁর সাথে কাউকে শরিক করবে না। আর আল্লাহর উপর বান্দার অধিকার হচ্ছে, যারা তাঁর সাথে কাউকে শরিক করবে না, তাহলে তিনি তাদেরকে শাস্তি দেবেন না।” আমি (মুআ’য) বললাম, “ইয়া রাসুলুল্লাহ, আমি কি এই সুসংবাদ লোকদেরকে জানিয়ে দেব না?” তিনি বললেন, “তুমি তাদেরকে এই সুসংবাদ দিওনা, তাহলে তারা ইবাদত ছেড়ে দিয়ে (আল্লাহর উপর ভরসা করে) হাত গুটিয়ে বসে থাকবে।” সহীহ মুসলিমঃ ৪৬, সহীহ বুখারীর ‘কিতাবুল রিক্বাক’, হাদীস নং-৫০৭।
অনেক মুসলিম রয়েছে, যারা জেনে কিংবা না জেনে অনেক সময় এমন কথা বলে ফেলে, কিংবা অজ্ঞতাবশত এমন কাজ করে বসে যা আসলে শিরকের অন্তর্ভুক্ত। শিরকি কথা ও কাজ থেকে বাঁচার জন্য প্রতিটি মুসলিমের উপর ফরয দায়িত্ব হচ্ছে কুরআন ও সুন্নাহ অনুযায়ী কোন কাজগুলো শিরক, এ ব্যপারে পূর্ণাংগ জ্ঞান অর্জন করা। এজন্য আমাদের তাওহীদ ও শিরকের উপরে লিখিত কিতাবগুলো পড়া উচিত এবং সহীহ আকিদার অনুসারী আলেমদের ওয়াজ-লেকচার শোনা উচিত। বিশেষ করে শায়খুল ইসলাম মুহা’ম্মদ ইবনে আব্দুল ওহহাব রাহিমাহুল্লাহর ‘কিতাবুত তাওহীদ’ বইটা সকলের পড়া ও বুঝা উচিত, যাতে করে তারা শিরক থেকে সতর্ক হতে পারে ও বেঁচে থাকতে পারে।
জানা-অজানা যেকোন শিরক থেকে বাঁচার জন্য রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আ’লাইহি ওয়া সাল্লামের শেখানো ছোট্ট একটা দুয়া আছে, কেউ যদি প্রতিদিন সকাল ও বিকালবেলা একবার করে এই দুয়াটা পড়ে, তাহলে আশা করা যায় আল্লাহ তাকে শিরক থেকে হেফাজত করবেন। দুয়াটা হচ্ছেঃ
اللَّهُمَّ إِنِّي أَعُوذُ بِكَ أَنْ أُشْرِكَ بِكَ وَأَنَا أَعْلَمُ، وَأَسْتَغْفِرُكَ لِمَا لاَ أَعْلَمُ
উচ্চারণঃ আল্লা-হুম্মা ইন্নী আ’উযুবিকা আন উশরিকা বিকা ওয়া আনা আ’লাম, ওয়া আস-তাগফিরুকা লিমা লা আ’লাম।
অনুবাদঃ হে আল্লাহ! আমার জানা অবস্থায় তোমার সাথে শিরক করা থেকে তোমার নিকট আশ্রয় প্রার্থনা করছি। আর আমার অজানা অবস্থায় কোনো শিরক হয়ে গেলে আমি তার জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করছি।
দুয়াটা পাবেন হিসনুল মুসলিম বইয়ের ২৪৬ পৃষ্ঠায়। মুসনাদে আহমাদ ৪/৪০৩, হাদীসটি সহীহ, সহীহ আল-জামে ৩/২৩৩।
দুয়াটা মুখস্থ করে প্রতিদিন সকাল ও সন্ধ্যায়, সালাম ফেরানোর পূর্বে কিংবা মুনাজাতে পড়া উচিত।
.
(৩) প্রকাশ্যে ও গোপনে, সর্বদা ‘তাক্বওয়া’ অনুযায়ী জীবন পরিচালনা করাঃ
তাক্বওয়ার প্রতিদান সম্পর্কে আল্লাহ তাআ’লা বলেন,
“(সেই দিন) মুত্তাক্বীদের জন্য জান্নাতকে নিকটবর্তী করা হবে।” সুরা আশ-শুআ’রাঃ ৯০।
“আর যে ব্যক্তি তার প্রতিপালকের সামনে দাঁড়ানোকে ভয় করে, তার জন্য রয়েছে দুইটি (জান্নাতের) বাগান।” সুরা আর-রাহ’মানঃ ৪৬।
“আর যারা পরম দয়াময় (আল্লাহকে) না দেখে ভয় করে, এবং (আল্লাহ) অভিমুখী অন্তর নিয়ে উপস্থিত হয়, (তাদেরকে বলা হবে) তোমরা শান্তির সাথে (জান্নাতে) প্রবেশ কর; এটা অনন্ত জীবনের দিন। সেখানে তারা যা কামনা করবে, তাই পাবে এবং আমার নিকট রয়েছে তারও অধিক*” সুরা আল-ক্বফঃ ৩৩-৩৫। *এই আয়াতে ‘অধিক’ অর্থ হচ্ছে, জান্নাতে আল্লাহকে দেখতে পাওয়ার নেয়ামত।
“আর যে ব্যক্তি তার পালনকর্তার সামনে দাঁড়ানোকে ভয় করেছে এবং প্রবৃত্তি বা খেয়াল-খুশি থেকে নিজেকে বিরত রেখেছে, তার ঠিকানা হবে জান্নাত।” সুরা আন-নাযিআ’তঃ ৪০-৪১।
আবু হুরায়রাহ রাদিয়াল্লাহু আ’নহু হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আ’লাইহি ওয়া সাল্লামকে প্রশ্ন করা হল, কোন আমল সবচাইতে বেশি পরিমাণে মানুষকে জান্নাতে নিয়ে যাবে? তিনি বলেন, “তাক্বওয়া, সদাচরণ ও উত্তম চরিত্র।” তাঁকে আবার প্রশ্ন করা হল, কোন আমল সবচাইতে বেশি পরিমাণে মানুষকে জাহান্নামে নিয়ে যাবে? তিনি বললেন, “মুখ ও লজ্জাস্থান।” ইবনে মাজাহ, তিরমিযীঃ ২০০৪, মিশকাতঃ ৪৬২১।
.
(৪) মৃত্যুর পূর্বে “লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ” বলাঃ
রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আ’লাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন “যার জীবনের শেষ কথা হবে ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ’, সে ব্যক্তি জান্নাতে প্রবেশ করবে।” আবু দাউদঃ ৩/১৯০, হাদীসটি সহীহ, শায়খ আলবানী, সহীহ তিরমিযীঃ ৩/১৫২।
এজন্য যে ব্যক্তি মনে করবে যে তার মৃত্যুর সময় চলে এসেছে, তাহলে সে একটু পরপর ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ’ বলতে থাকবে। মুমূর্ষ ব্যক্তিকে তার কাছের আত্মীয়-স্বজনেরা ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ’ বলার জন্য স্বরণ করিয়ে দিবে। খেয়াল রাখতে হবে, কোন কথা বলে ফেললে কথা শেষ করে পুনরায় ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ’ বলতে হবে। যাতে করে তার মুখ দিয়ে উচ্চারিত সর্বশেষ কথাটা হয় ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ’। ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ’ বলার পর কিছুক্ষণ চুপ করে বা অজ্ঞান থাকার পরেও যদি মৃত্যু হয়, তবুও তার সর্বশেষ কথা ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ’ বলে ধরে নেওয়া হবে, এবং সে ব্যক্তি এই হাদীসে বর্ণিত ফযীলত, অর্থাৎ জান্নাত পাবে বলে আশা করে যায়।
.
(৫) ওযুর পরে ‘কালিমা শাহাদাত’ পাঠ করাঃ
রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আ’লাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন “যে ব্যক্তি পূর্ণভাবে ওযু করবে, অতঃপর কালিমা শাহাদাত পাঠ করবে, তার জন্য জান্নাতের আটটি দরজাই খুলে দেওয়া হবে। সে যেটা দিয়ে ইচ্ছা জান্নাতে প্রবেশ করতে পারবে।” মুসলিমঃ ১/২০৯, মিশকাতঃ ২৮৯।
কালিমা শাহাদাত হচ্ছেঃ “আশহাদু আল-লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়াহ’দাহু লা শারিকা-লাহু ওয়া আশহাদু আন্না মুহা’ম্মাদান আ’বদুহু ওয়া রাসুলুহ।”
জানা-অজানা যেকোন শিরক থেকে বাঁচার জন্য রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আ’লাইহি ওয়া সাল্লামের শেখানো ছোট্ট একটা দুয়া আছে, কেউ যদি প্রতিদিন সকাল ও বিকালবেলা একবার করে এই দুয়াটা পড়ে, তাহলে আশা করা যায় আল্লাহ তাকে শিরক থেকে হেফাজত করবেন। দুয়াটা হচ্ছেঃ
اللَّهُمَّ إِنِّي أَعُوذُ بِكَ أَنْ أُشْرِكَ بِكَ وَأَنَا أَعْلَمُ، وَأَسْتَغْفِرُكَ لِمَا لاَ أَعْلَمُ
উচ্চারণঃ আল্লা-হুম্মা ইন্নী আ’উযুবিকা আন উশরিকা বিকা ওয়া আনা আ’লাম, ওয়া আস-তাগফিরুকা লিমা লা আ’লাম।
অনুবাদঃ হে আল্লাহ! আমার জানা অবস্থায় তোমার সাথে শিরক করা থেকে তোমার নিকট আশ্রয় প্রার্থনা করছি। আর আমার অজানা অবস্থায় কোনো শিরক হয়ে গেলে আমি তার জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করছি।
দুয়াটা পাবেন হিসনুল মুসলিম বইয়ের ২৪৬ পৃষ্ঠায়। মুসনাদে আহমাদ ৪/৪০৩, হাদীসটি সহীহ, সহীহ আল-জামে ৩/২৩৩।
দুয়াটা মুখস্থ করে প্রতিদিন সকাল ও সন্ধ্যায়, সালাম ফেরানোর পূর্বে কিংবা মুনাজাতে পড়া উচিত।
.
(৩) প্রকাশ্যে ও গোপনে, সর্বদা ‘তাক্বওয়া’ অনুযায়ী জীবন পরিচালনা করাঃ
তাক্বওয়ার প্রতিদান সম্পর্কে আল্লাহ তাআ’লা বলেন,
“(সেই দিন) মুত্তাক্বীদের জন্য জান্নাতকে নিকটবর্তী করা হবে।” সুরা আশ-শুআ’রাঃ ৯০।
“আর যে ব্যক্তি তার প্রতিপালকের সামনে দাঁড়ানোকে ভয় করে, তার জন্য রয়েছে দুইটি (জান্নাতের) বাগান।” সুরা আর-রাহ’মানঃ ৪৬।
“আর যারা পরম দয়াময় (আল্লাহকে) না দেখে ভয় করে, এবং (আল্লাহ) অভিমুখী অন্তর নিয়ে উপস্থিত হয়, (তাদেরকে বলা হবে) তোমরা শান্তির সাথে (জান্নাতে) প্রবেশ কর; এটা অনন্ত জীবনের দিন। সেখানে তারা যা কামনা করবে, তাই পাবে এবং আমার নিকট রয়েছে তারও অধিক*” সুরা আল-ক্বফঃ ৩৩-৩৫। *এই আয়াতে ‘অধিক’ অর্থ হচ্ছে, জান্নাতে আল্লাহকে দেখতে পাওয়ার নেয়ামত।
“আর যে ব্যক্তি তার পালনকর্তার সামনে দাঁড়ানোকে ভয় করেছে এবং প্রবৃত্তি বা খেয়াল-খুশি থেকে নিজেকে বিরত রেখেছে, তার ঠিকানা হবে জান্নাত।” সুরা আন-নাযিআ’তঃ ৪০-৪১।
আবু হুরায়রাহ রাদিয়াল্লাহু আ’নহু হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আ’লাইহি ওয়া সাল্লামকে প্রশ্ন করা হল, কোন আমল সবচাইতে বেশি পরিমাণে মানুষকে জান্নাতে নিয়ে যাবে? তিনি বলেন, “তাক্বওয়া, সদাচরণ ও উত্তম চরিত্র।” তাঁকে আবার প্রশ্ন করা হল, কোন আমল সবচাইতে বেশি পরিমাণে মানুষকে জাহান্নামে নিয়ে যাবে? তিনি বললেন, “মুখ ও লজ্জাস্থান।” ইবনে মাজাহ, তিরমিযীঃ ২০০৪, মিশকাতঃ ৪৬২১।
.
(৪) মৃত্যুর পূর্বে “লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ” বলাঃ
রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আ’লাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন “যার জীবনের শেষ কথা হবে ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ’, সে ব্যক্তি জান্নাতে প্রবেশ করবে।” আবু দাউদঃ ৩/১৯০, হাদীসটি সহীহ, শায়খ আলবানী, সহীহ তিরমিযীঃ ৩/১৫২।
এজন্য যে ব্যক্তি মনে করবে যে তার মৃত্যুর সময় চলে এসেছে, তাহলে সে একটু পরপর ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ’ বলতে থাকবে। মুমূর্ষ ব্যক্তিকে তার কাছের আত্মীয়-স্বজনেরা ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ’ বলার জন্য স্বরণ করিয়ে দিবে। খেয়াল রাখতে হবে, কোন কথা বলে ফেললে কথা শেষ করে পুনরায় ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ’ বলতে হবে। যাতে করে তার মুখ দিয়ে উচ্চারিত সর্বশেষ কথাটা হয় ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ’। ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ’ বলার পর কিছুক্ষণ চুপ করে বা অজ্ঞান থাকার পরেও যদি মৃত্যু হয়, তবুও তার সর্বশেষ কথা ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ’ বলে ধরে নেওয়া হবে, এবং সে ব্যক্তি এই হাদীসে বর্ণিত ফযীলত, অর্থাৎ জান্নাত পাবে বলে আশা করে যায়।
.
(৫) ওযুর পরে ‘কালিমা শাহাদাত’ পাঠ করাঃ
রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আ’লাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন “যে ব্যক্তি পূর্ণভাবে ওযু করবে, অতঃপর কালিমা শাহাদাত পাঠ করবে, তার জন্য জান্নাতের আটটি দরজাই খুলে দেওয়া হবে। সে যেটা দিয়ে ইচ্ছা জান্নাতে প্রবেশ করতে পারবে।” মুসলিমঃ ১/২০৯, মিশকাতঃ ২৮৯।
কালিমা শাহাদাত হচ্ছেঃ “আশহাদু আল-লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়াহ’দাহু লা শারিকা-লাহু ওয়া আশহাদু আন্না মুহা’ম্মাদান আ’বদুহু ওয়া রাসুলুহ।”
.
(চলবে, ইন শা আল্লাহ।)
(চলবে, ইন শা আল্লাহ।)
No comments:
Post a Comment