আমি তো কোনো দিন কোনো পরপুরুষের সামনে যাইনি...
একটি আদর্শ পর্দানশীন পরিবারে বেড়ে ওঠা উম্মে মুহাম্মাদ বিনতে হারূন মাসিক আলকাউসারে লিখেছিলেন এ বিষয়ে। তিনি লেখেন,
আমরা ছোটবেলা থেকে নানুর পর্দার বিষয়টি খুব গভীরভাবে অনুভব করেছি। পর্দার বিষয়ে তিনি ছিলেন অতি সতর্ক। বাইরের তো দূরের কথা ভিতরের কোনো গায়রে মাহরাম পুরুষ নানুর আঁচলও দেখতে পারেনি কোনো দিন। আমার ওয়ালিদে মুহতারাম হযরত মাওলানা হারুনুর রশীদ দামাত বারাকাতুহুম হলেন নানুর বড় জামাতা। তিনি তাঁর শাশুড়ির পর্দার বিষয়টি এভাবে বলেছেন- ‘আমার বিয়ের পর প্রায় দু’বছর পর্যন্ত আমার শাশুড়ি আমার সামনে আসেননি। জামাতা হিসাবে আদর-আপ্যায়নের সবটুকুই করতেন। কথাও বলতেন। তবে সামনে আসতেন না। ছোট থাকতেই ‘মা’-কে হারিয়েছি, এদিকে শাশুড়িকেও দেখতে পাই না, এটা আমাকে পীড়া দিত। আমার শাশুড়ী ছিলেন বিচক্ষণ। তিনি বিষয়টি বুঝতে পেরে একদিন পর্দার আড়াল থেকে বললেন, ‘বাবা! আমি তো কোনো দিন কোনো পরপুরুষের সামনে যাইনি, কথাও বলিনি, তাই আপনার সামনে যেতে সংকোচ লাগে। ধীরে ধীরে এটা ঠিক হয়ে যাবে ইনশাআল্লাহ। আপনি কষ্ট নিবেন না।’
এ কারণেই আমার এক দুলাভাই আপাকে বলেছেন, তোমাদের পর্দার ভিত্তি হিমালয় পাহাড়ের মত মজবুত। প্রবল বন্যার স্রোত কোনো কোনো পরিবারের পর্দায় আঘাত হানলেও তোমাদের পর্দায় আঘাত হানতে পারেনি।
(নানুকে আমি যেমন দেখেছি, মাসিক আলকাউসার, ডিসেম্বর, ২০১৫)
কাছে আসার দুর্দান্ত গল্পের হোতারা অথবা অদেখাকে দেখানোর ডিলাররা কি এই পবিত্রতাকে কখনো স্পর্শ করতে পারবে?
সব জামানাতেই পূর্বসূরিদের যোগ্য কিছু উত্তরসূরি থাকে। ওপরে আমরা তারই নজির পড়লাম। আমাদের সন্তানরাও যেন এমন নজির স্থাপন করতে পারে, সে জন্য আমাদের মায়েদের সেভাবে গড়তে হবে। মায়েরা আদর্শ সন্তান গড়ার শপথ নিলেই হতে পারে অনন্য দৃষ্টান্তের জন্ম।
উম্মতের ভবিষ্যৎ মায়েদের সরলতাকে পুঁজি করে বহু ধড়িবাজ মেতে উঠেছে বিষাক্ত খেলায়। জীবনকে রাঙানোর অলীক স্বপ্ন দেখিয়ে ভুলিয়ে ভালিয়ে মজা লুটতে মঞ্চ তৈরি করছে মরীচিকা-ব্যবসায়ীরা। তারা হাওয়াই মিঠাইকে সাজিয়ে গুছিয়ে সামনে রাখছে। আলাভোলা বোনেরা তাকেই সত্যি ভেবে জড়িয়ে যাচ্ছে। অথচ মুহূর্তেই সব শেষ হবে—শেষ হওয়ারই তা।
আমরা দেখেছি। এই আলাভোলা ফুর্তিবাজ, রঙিন দুনিয়ায় মেতে থাকা, কল্পনার আকাশে বর্ণিল ফানুস উড়ানো, আলো-ঝলমলে জগৎটাকে আপন করে নেয়া বোনেরা যখন একটু পথের দিশা পায়—মুহূর্তেই ছুড়ে ফেলে সব আবর্জনা।
এই সাদাসিধা বোনগুলো তখন অবাক হয়ে ভাবে—খাদিজা, ফাতিমা, আয়েশা, রাবেয়ার সাথেই তো ছিল আমার আজন্ম মিল। তো কেন মরতে গিয়েছিলাম সেই জাদুকরের আস্তানায়? যে মায়াবলে আচ্ছন্ন করে রেখে বোঝায়—বেলা বহু বাকি। সবে তো সকাল গড়িয়ে দুপুর!
তারা আপন করে নেয় দ্বীন ইসলামকে।
ভালোবেসে জড়িয়ে নেয় কুরআনকে।
নামাযের মুসল্লাকে বানায় আশ্রয়স্থল।
যিকিরে প্রশান্ত হয় তার হৃদয়।
সামান্য কথাতেই চোখ বেয়ে নামে আঁসু।
এই বোনেরাই স্বপ্ন দেখে উম্মে মুহাম্মাদ হতে।
হতে আবু বকর, ওমরের মা।
বন্ধু, এসব তো চোখে দেখেই বলছি।
অদেখার কথা তো বাকিই রইল।
আসুন না, আলোর পথ উন্মুক্ত করি। ঘুটঘুটে অন্ধকার ভুতুড়ে কুঠুরির জানালাটা খুলে দিই। আসুক আলো। সাথে বাতাসকেও আনুক ডেকে।
‘দেখিয়ে দাও অদেখা তোমাকে’।
এই গল্প নতুন করে হোক লেখা। আল্লাহর কাছে আসার ও অন্যকে আনার যে প্রতিভা আল্লাহ তোমাকে দিয়েছিল, দেখিয়ে দাও তাকে তার সঠিক ব্যবহার তুমি করেছ।
নেক কাজে তানাফুস আর প্রতিযোগিতা হোক।
বদদ্বীনীর এই সয়লাবে বাড়িয়ে দিই নেক আমল।
বাড়িয়ে দিই দাওয়াতের আমল।
উমেদ পয়েন্ট সামনের ক’টা দিন মহীয়সী নারীদের জীবনীর ওপর লেখা নির্দিষ্ট কিছু বইয়ের ওপর দেবে অতিরিক্ত ছাড়।
আল্লাহ তাআলা এখলাসের সাথে আমাদের সব কাজ করার তাওফিক দিন। আমাদের দাওয়াতকে ফলপ্রসূ করুন। নেক কাজগুলো কবুল করুন। আমীন
Post Top Ad
Responsive Ads Here
Tuesday, February 13, 2018
আমি তো কোনো দিন কোনো পরপুরুষের সামনে যাইনি...
Tags
# হাদিস
Share This
About Rayhana Jahan
হাদিস
Labels:
হাদিস
Subscribe to:
Post Comments (Atom)
Post Bottom Ad
Responsive Ads Here
Author Details
Templatesyard is a blogger resources site is a provider of high quality blogger template with premium looking layout and robust design. The main mission of templatesyard is to provide the best quality blogger templates which are professionally designed and perfectlly seo optimized to deliver best result for your blog.
No comments:
Post a Comment